কৃষি তথ্য ও সেবা প্রাপ্তিতে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অনেক ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের ১৪ টি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের নাম ও অবস্থান নিচে উল্লেখ করা হলো।
কৃষি তথ্য ও সেবা প্রাপ্তিতে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং কৃষিসংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান কাজ হলো নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উদ্ভাবিত প্রযুক্তিগুলোর গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা এবং গ্রহীতার উপযোগী আকারে সম্প্রসারণ কর্মীর নিকট হস্তান্তর করা। নিচে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের তালিকা এবং উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি উল্লেখ করা হলো:
বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের নাম
- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI), গাজীপুর।
- বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI), গাজীপুর।
- বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BINA), ময়মনসিংহ।
- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC), ঢাকা।
- বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (BJRI), ঢাকা।
- বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (BSRI), ঈশ্বরদী।
- বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (BTRI), শ্রীমঙ্গল, সিলেট।
- বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (BSRTI), রাজশাহী।
- বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট (BFRI), চট্টগ্রাম।
- বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (BLRI), সাভার, ঢাকা।
- বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (BFRI), ময়মনসিংহ।
- মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (SRDI), ঢাকা।
- বাংলাদেশ প্রাণী চিকিৎসা গবেষণা ইনস্টিটিউট (BVRI)।
- বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (BWMRI)।
উপরোক্ত ১৪ টি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সকল কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম গবেষণা ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৭০ সালে বর্তমান ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলায় প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে এ প্রতিষ্ঠানের ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। এগুলো হলো— রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, কুমিল্লা হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরা জেলায়। এ প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত শতাধিক আধুনিক জাতের উচ্চফলনশীল ধান উদ্ভাবন করেছে। এছাড়াও মৃত্তিকা, সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা, চাষাবাদ পদ্ধতি, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনা, কৃষি খামার যন্ত্রপাতি ও শস্যবিন্যাস বিষয়ে অনেক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। উদ্ভাবিত জাতগুলো বোরো, আউশ ও আমন তিন মৌসুমেই চাষ করা হয়। ব্রির উদ্ভাবিত এসব জাতের মধ্যে সুগন্ধময়, জিঙ্ক সমৃদ্ধ, লবণাক্ততা ও খরাসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে।
- ধানের নতুন নতুন উফশীজাত উদ্ভাবন করা।
- পোকামাকড় ও রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে ধান ফসল রক্ষার জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা।
- ধান চাষবিষয়ক প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে হস্তান্তরের জন্যে মাঠ দিবসের আয়োজন করা।
- ধান ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যে সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনা ও সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার নির্দেশনা প্রদান করা।
- IRRI-এর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তথ্য, জাত ও কলাকৌশল আদান-প্রদান করা।
- ধান চাষ সম্পর্কিত লিফলেট, পুস্তিকা, বই প্রকাশ ও বিতরণ করা।
- প্রদর্শনী প্লট তৈরি করে কৃষকের মাঝে উন্নত জাত ও চাষাবাদের প্রযুক্তি বিস্তারে সহায়তা করা।
- ধানজাতপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ যন্ত্র উদ্ভাবন ও ধানের বহুমুখী ব্যবহার কৌশল উদ্ভাবন।
- প্রতিকূল অবস্থা থেকে ধান ফসলকে রক্ষা করার উন্নত কলাকৌশল উদ্ভাবন করা।
- আঞ্চলিক উপকেন্দ্রগুলোর ধান উৎপাদনে সমস্যার দিক নির্দেশনা প্রদান করে।
Post a Comment