**সৃজনশীল প্রশ্ন:**
১. কৃষিবিদ ইমন গ্রামের বাড়ি নড়াইলের ধোলাই তলায় গিয়ে কৃষকের সাথে স্থানীয় কৃষি আবহাওয়া ও ফসল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন ।তিনি বললেন অঞ্চল ভেদে সামান্য তারতম থাকলেও পরিমিতি বৃষ্টিপাত, মধ্যে গ্রীষ্মকাল বাংলাদেশের জলবায়ু প্রধান বৈশিষ্ট্য।
ক ) আবহাওয়া কী ?
আবহাওয়া হলো কোন স্থানের দৈনিক দৃষ্টিপাত, উষ্ণতা আর্দ্রতা, বায়ুর গতি ও চাপ সূর্যালোক প্রভৃতি সামগ্রিক অবস্থাকে ওই স্থানের কোন নির্দিষ্ট দিনের আবহাওয়া বলে ।
খ) বাংলাদেশের জলবায়ুকে সমভাবাপন্ন বলা হয় কেন?
জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে অক্ষাংশ, সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে উচ্চতার, সমুদ্র থেকে দূরত্ব ,বায়ু প্রবাহের দিক বৃষ্টিপাত ,সমুদ্র স্রোত, পরিবর্তনের অবস্থান গাছপালা, ভূমির ঢাল ,মাটির বিশেষত্ব ইত্যাদির উপর ।সারা বছর যে জলবায়ু উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন হয় না তাকে সমভাবাপন্ন জলবায়ু বলে।
গ) খরিফ ২ মৌসুমে কৃষিবিদ ইমন সম্ভাব্য কোন ফসল চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছিলেন কেন ?
খরিফ মৌসুমে কৃষিবিদ ইমন সম্ভাব্য আমন ধান চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। ব্যাখ্যা করা হলো :
খরিপ দুই মৌসুম বিস্তৃত জুলাই থেকে অক্টোবর বা আষাঢ় মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে কাত্তিক মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ মাস পর্যন্ত তাকে খরিফ দুই মৌসুম বলে। এ মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। শস্য উৎপাদনে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। এ সময়ে ফসল ফসলের পোকামাকড় ও রোগ বালাইয়ের উপদ্রব বেশি হয়। মাঝে মাঝে পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজন হতে পারে। শিলাবৃষ্টি সম্ভাবনা খুবই কম। এ সময়ে তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে। বাতাসে আদ্রতা অনেক বেশি থাকে। প্রায় সারাক্ষণ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে। এ মৌসুমের উৎপন্ন ফসল কে গরিব দুই ফসল বলে। তাই কৃষিবিদ ইমন আমন ধান চাষ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
ঘ) ধলাইতলা গ্রামে পাট চাষের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ কর।
ধুলোই তোলার গ্রামে পাঁচ চয়েস সম্ভাবনা কারণ ঐ খানের মৌসুম খরিফ -১ মৌসুম, নিম্নে এর বিশ্লেষণ করা হলো:
খরিফ এক মৌসুমের বিস্তৃত মাঠ থেকে জুন বা ফাল্গুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ হতে আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহ মাস পর্যন্ত তাকে খরিফ এক মৌসুম বলে। এ মৌসুমে মাজহারী ধরনের দৃষ্টিপাত হয় । শস্য উৎপাদনের জন্য পানি সেচের এর প্রয়োজন হয়। এ মৌসুমে প্রকাশের উপদ্রব মাঝারি ধরনের হয়। এ সময়ের তাপমাত্রা অধিক থাকে । শিলাবৃষ্টির কারণে আশঙ্কা বেশি থাকে। বাতাসের আদ্রতা মাঝারি । মাঝে মাঝে আকাশ মেঘলা থাকে। এ সময় মৌসুমের উৎপন্ন ফসল হরিব এক বলে যেমন পাট । তাই ধলাইতলা গ্রামে পাট চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
২. কৃষক রহমান সাহেব তার জমিতে দীর্ঘদিন ধরে আখ চাষ করছেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি লক্ষ্য করছেন যে তার আখের ফলন ক্রমশ কমে যাচ্ছে। নতুন জাতের আখ চাষ করেও তিনি আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না। অন্যদিকে, তার প্রতিবেশী করিম সাহেব একই জমিতে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং রোগ প্রতিরোধী জাতের আখ চাষ করে প্রতি বছর ভালো ফলন পাচ্ছেন।
ক) আখের প্রধান ব্যবহার কী?
খ) আখ চাষের জন্য কেমন মাটি উপযুক্ত?
গ) রহমান সাহেবের জমিতে আখ ফলন কমে যাওয়ার কারণগুলো কী হতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) করিম সাহেবের মতো ভালো ফলন পেতে রহমান সাহেবকে কী কী আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করতে হবে? বিশ্লেষণ করো।
**উত্তর:**
**ক) আখের প্রধান ব্যবহার:**
আখের প্রধান ব্যবহার হলো চিনি ও গুড় উৎপাদন। এটি খাদ্যশিল্পের একটি অপরিহার্য উপাদান।
**খ) আখ চাষের জন্য কেমন মাটি উপযুক্ত:**
আখ চাষের জন্য উর্বর, গভীর এবং ভালো নিষ্কাশন ব্যবস্থা যুক্ত দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযুক্ত। এই মাটিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এবং পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল বজায় থাকে। মাটির pH ৬.৫ থেকে ৭.৫ এর মধ্যে থাকা উচিত।
**গ) রহমান সাহেবের জমিতে আখ ফলন কমে যাওয়ার কারণগুলো:**
রহমান সাহেবের জমিতে আখ ফলন কমে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে:
* **জমির উর্বরতা হ্রাস:** দীর্ঘদিন ধরে একই জমিতে আখ চাষ করার ফলে জমির উর্বরতা কমে যেতে পারে। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব ফলনকে প্রভাবিত করতে পারে।
* **পুরোনো জাতের ব্যবহার:** রহমান সাহেব যদি এখনো পুরনো এবং কম ফলনশীল জাতের আখ চাষ করেন, তবে ফলন কম হওয়া স্বাভাবিক। নতুন উদ্ভাবিত রোগ প্রতিরোধী এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলনায় পুরনো জাত পিছিয়ে থাকতে পারে।
* **রোগ ও পোকার আক্রমণ:** জমিতে রোগ ও পোকার আক্রমণ হতে পারে যা গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত করে এবং ফলন কমিয়ে দেয়। তিনি যদি রোগ ও পোকা দমনের সঠিক ব্যবস্থা না নেন, তবে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে।
* **অপর্যাপ্ত পরিচর্যা:** আখ চাষের জন্য নিয়মিত পরিচর্যা, যেমন - সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান, আগাছা দমন ইত্যাদি জরুরি। এর অভাব ফলনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
* **মাটির স্বাস্থ্য:** মাটির স্বাস্থ্য খারাপ হলে, যেমন - জলাবদ্ধতা বা অম্লতা বেশি থাকলে, আখের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।
**ঘ) করিম সাহেবের মতো ভালো ফলন পেতে রহমান সাহেবের করণীয়:**
করিম সাহেবের মতো ভালো ফলন পেতে রহমান সাহেবকে নিম্নলিখিত আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করতে হবে:
* **উন্নত ও রোগ প্রতিরোধী জাতের ব্যবহার:** তাকে অবশ্যই নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল এবং রোগ প্রতিরোধী আখের জাত নির্বাচন করে চাষ করতে হবে। স্থানীয় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র বা কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সঠিক জাত নির্বাচন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
* **আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ:** জমিতে সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে চারা রোপণ করতে হবে। সারি এবং চারার মধ্যে উপযুক্ত দূরত্ব বজায় থাকলে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং আলো বাতাস সহজে পৌঁছাতে পারে।
* **সুষম সার প্রয়োগ:** মাটির পরীক্ষার মাধ্যমে জমিতে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার সঠিক পরিমাণে ও সময়ে প্রয়োগ করতে হবে। জৈব সার ব্যবহার মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদী ফলনের জন্য উপকারী হবে।
* **সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা:** জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী সেচের ব্যবস্থা করতে হবে এবং অতিরিক্ত জল নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত নালার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
* **রোগ ও পোকা দমন:** নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং রোগ বা পোকার আক্রমণ দেখা গেলে দ্রুত উপযুক্ত কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। জৈব কীটনাশক ব্যবহার পরিবেশের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে।
* **আগাছা দমন:** আগাছা আখের পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে এবং রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে। তাই নিয়মিত আগাছা দমন করতে হবে।
* **ফসল পর্যায়:** একই জমিতে দীর্ঘদিন আখ চাষ না করে মাঝে মাঝে অন্য ফসল চাষ করলে মাটির উর্বরতা বজায় থাকে এবং রোগ ও পোকার প্রকোপ কমে।
* **কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার:** আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, যেমন - ড্রোন ব্যবহার করে সার ও কীটনাশক স্প্রে করা বা উন্নত সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করা ফলন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
* **কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:** নিয়মিত কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া এবং তাদের দেখানো পথে চাষাবাদ করা ফলন বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. সুজন মিয়া ফুলতলা গ্রামের একজন কৃষক।বাড়ি থেকে বাজারে যেতে হলে তাকে দুপুরে প্রচন্ড রোদে চার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। বিশ্রাম নেওয়ার মতো ছায়া কোথাও নেই। তাই সে কয়েকজন কৃষকের সাথে আলোচনা করে সম্পূর্ণ রাস্তায় কিছু বনজ বৃক্ষের চারা রোপন করেন। তারা উৎপাদিত দ্রব্যগুলো চুক্তি অনুযায়ী বন্টনের সিদ্ধান্ত নেয়।
(ক) মাঠ ফসল কি?
( খ) টমেটো কেন উদ্যান ফসল?ব্যাখ্যা কর।
(গ) উদ্দিপকের ফসলটি কৃষির কোন ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত ? ব্যাখ্যা কর।
(ঘ)সুজন মিয়ার উদ্যোগটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মূল্যায়ন কর।
(ক) মাঠ ফসল কি?
উত্তর: মাঠ ফসল হলো যেসব উদ্ভিদের খাদ্য ও আর্থিক উপযোগিতা আছে এবং তুলনামুলক পরিচর্যার প্রয়োজন হলেও উঁচু- নিচু সব ধরনের জমিতে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয় সেগুলোকে মাঠ ফসল বলে।
(খ) টমেটো কেন উদ্যান ফসল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যেসব ফসল উদ্যানে ব্যাড়া যুক্ত অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে উৎপাদন করা হয় তাকে উদ্যান ফসল বলে।
টমেটো ফসল টি সাধারণত বাড়ির ছাদে বা বাড়ি আসে পাষে উঁচু জমিতে চাষ করা হয়। এবং এক্ষেত্রে প্রতিটি গাছের বিষেস যত্ন নেওয়া হয়। টমেটো ফসল টি কোনো রকম প্রসেসিং বা প্যক্রিয়া জাত করন ছাড়াই খাওয়া যায়। এবং এটি সবজি জাতিয় ফসল সবজি জাতিয় সব ফসলই উদ্যান ফসল। এবং টমেটো একটি উদ্যান ফসল।
৪. রবিনের বাবা দীর্ঘদিন যাবৎ চরাঞ্চলে চীনাবাদাম ও তরমুজ চাষ করে আসছিলেন। বাবার মৃত্যুর পরে সে মাঠ ফসল চাষের ইচ্ছায় কৃষি অফিসে যায় গিয়ে পরামর্শ চায়।কৃষি কমকর্তা তাকে মাটির বুনট পরিবর্তন করতে বলে। কমকর্তা তাকে আরও বললেন মাটির বুনট বিবেচনায় রেখে ফসল নিবাচন করা উচিত।
( ক) মাটির বুনট কী?
(খ) মাটির বুনটের গুরুত্ব বুঝিয়ে লিখ।
(গ) রবিনকে কৃষি কমকর্তা যে পরামর্শ দিয়েছেন উদ্দীপকের আলোকে তা বণনা কর।
(ঘ) উদ্দীপকের শেষোক্ত বাক্যটি বিশ্লেষণ কর।
উত্তর :
(ক) মাটির বুনট হলো মাটিস্হ বালি,পলি ও কর্দম কণার তুলনামূলক পরিমাণ বা শতকরা অনুপাত।
(খ) মৃত্তিকার বুনটের উপর কৃষি নির্ভরশীল। কৃষিতে মাটির বুনটের গুরুত্ব নিম্নরূপ :
১. মৃত্তিকার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে জানা যায়। ফলে উদ্ভিদ তথা ফসল কি পরিমান পানি সংশোধনের সক্ষম, তা ধারণা করা যায়।
২. চাষাবাদ ও ফসল উৎপাদনের জন্য মৃত্তিকার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা করা যায়।
৩. সময় মত সেচ ও নিষ্কাশন করার ক্ষেত্রে বুনট অপরিহার্য।
৪. মৃত্তিকা শ্রেণীবিন্যাসের সহায়তা করে।
৫. শস্য নির্বাচনে সহায়তা করে।
৬. বীজ বপন কাল নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. মৃত্তিকার পুষ্টি উৎপাদন ধারণ বুনট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
৮. মাটিতে বায়ু চলাচলের অবস্থা জানা যায়।
৯. মাটির সচ্ছিদ্রতা বা রন্ধ্রপরিসর বুনট এর উপর নির্ভর করে।
১০. অনুজীবের কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে।
(গ) রবিনদের চরাঞ্চলের জমির মাটি বেলে মাটি। বেলে মাটিতে চিনা বাদাম, তরমুজ প্রভৃতি ভালো জন্মে কিন্তু মাঠ ফসল ভালো হয় না। এজন্য কৃষি কর্মকর্তা মাঠ ফসলের ব্যাপারে রবিনকে মাটির বুনট পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থাৎ বেলে মাটিকে পরিবর্তন করে দো-আঁশ পরিবর্তন করতে বলেছেন। কারণ দোআঁশ মাটিতে মাঠ ফসল ভালো হয়। বেলে মাটিকে দোআঁশ মাটিতে পরিবর্তন করা যায়।
বেলে মাটিকে দোআঁশ মাটিতে পরিবর্তনের পদ্ধতি :
(১) সবুজ সার প্রয়োগ :
এজন্য রবিনদের চরাঞ্চলের জমিতে চৈত্র বৈশাখ মাসে ধৈঞ্জা বিজ ছিটিয়ে দিতে হবে। ফুল আসার পূর্বেই কচি সবুজ অবস্থায় ধৈঞ্জা গাছ মাটির সাথে মিশিয়ে সবুজ সার তৈরি করতে হয়। এতে বেলে মাটির সাথে সবুজসার মিশে বেলে মাটি দোআঁশ মাটিতে পরিবর্তিত হবে।
(২) খামারজাত সার প্রয়োগ :
গৃহপালিত পশু পাখির মলমূত্র, বিছনার খরকুটা, ঘাস ও অন্যান্য পরিত্যাজ্য দ্রব্য পচিয়ে খামারজাত সার তৈরি করা যায়। এটি একটি উত্তম জৈব সার। এই সার রবিনদের চরাঞ্চল জমিতে বেলে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে বেলে মাটির বুনট দোআঁশ মাটির অনুরূপ হয়।
(৩) কম্পোস্ট সার প্রয়োগ :
নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে জৈব আবর্জনা যেমন- লতাপাতা, কচুরিপানা, শাকসবজির উচ্ছিষ্টাংশ পচিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করতে হয়।এই সার রবিন দের চরাঞ্চলের জমিতে বেলে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে মাটি দোআঁশে পরিবর্তিত হয় ।
তাছাড়া জমিতে যথেষ্ট পরিমাণে ছাই সার প্রয়োগের মাধ্যমেও বেলে মাটিকে দোআঁশ মাটিতে পরিবর্তন করা যায়।
( ঘ) "মাটির বুনট বিবেচনায় রেখে ফসল নির্বাচন করা উচিত।" উদ্দীপকের এই বাক্যটি সঠিক ও যুক্তিযুক্ত কারণ, সকল বুনটের মাটিতে সব ধরনের ফসল ভালো হয় না । একেক বুনটের মাটিতে একেক ফসল ভালো হয়। প্রতিটি ফসলের জন্য নির্দিষ্ট বুনটের মাটি প্রয়োজন। যেমন- বেলে মাটিতে চিনা বাদাম, তরমুজ, খেজুর, গোল আলু, মিষ্টি আলু, পিয়াজ, রসুন,আদা,হলুদ,বাঙ্গি ধরনের ভালো হয়। বেলে মাটির পানির ধারন ক্ষমতা কম। তাই বেলে মাটিতে অন্য ফসল ভালো হয় না।
দোআঁশ মাটিতে প্রায় সব ফসল ভালো হয়। আবার এঁটেল মাটিতে সব ফসল ভালো হয় না। এঁটেল মাটিতে কাঁঠাল, আনারস, কমলালেবু, আমন ধান, পাট ইত্যাদি ভালো হয়। বেলে মাটির কণা বড় হওয়ার কারণে বেলে মাটি পানি ও পুষ্টি উৎপাদন ধরে রাখতে পারে না। ফলে পানি ও পুষ্টি উপাদান মাটির গভীরে চলে যায়। এজন্য বেলে মাটি পছন্দ কারি ফসলের শিকড় দীর্ঘ ও লম্বা হয়। ফলে বেলে মাটির ফসল মাটির গভীর থেকে পানি ও পুষ্টি উৎপাদন গ্রহণ করতে পারে।
অন্যদিকে দোআঁশ মাটির কনা মাঝারি বলে এই মাটির পানি ও পুষ্টি উপাদান ধারণ ক্ষমতা মধ্যম। এজন্য মধ্যম আকৃতির শিকড় বিশিষ্ট ফসল দোআঁশ মাটির জন্য নির্বাচন করতে হয়।
এঁটেল মাটির কণা খুব ছোট বলে পানি ও পুষ্টি উপাদান ভূপৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি মাটির ৫-৬ ইঞ্চি গভীরতার মধ্যেই থাকে । এজন্য এঁটেল মাটিতে ছোট শিকড় বিশিষ্ট ফসল নির্বাচন করতে হয়।
Post a Comment