লোড হচ্ছে...

গবাদিপশুকে ভ্যাকসিন/টিকা দেওয়ার আগে যা আপনাকে জানতে হবে। ভ্যাকসিন/টিকা দেওয়ার নিয়ম। Vaccination method in livestock. #Vaccine #method #veterinary #livestock #cattle #cow

 







ভ্যাকসিন/টিকা প্রদানকারীর করণীয়

ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়ার উদ্দেশ্য হলো পশুপাখিকে রোগের হাত হতে রক্ষা করা কিন্ত অনেক সময় ভ্যাকসিন দিয়ে রোগের প্রকোপ কমানো যায় না এমনকি রোগ প্রতিরোধ তৈরির পূর্বে অনেক পশুপাখি দুর্ঘটনায় পড়ে। ভ্যাকসিন দেয়ার পর পরই প্রচন্ড ব্যথা হওয়া, লালা ঝরা, অস্থিরতাসহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় এমনকি পশু সংগে সংগে/কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। আবার অনেক সময় ভ্যকাসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে টিকা প্রদানের জায়গার মাংসপেশী অনেক ফুলে যায় অথবা ফোঁড়া হয়। এমনকি দুধ শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে হলে ভ্যাকসিন প্রদানকারীকে অবশ্যই নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ মেনে চলতে হবে। 
(১)    টিকা বা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার মেয়াদকাল দেখে নিতে হবে অর্থাৎ ভ্যাকসিনের মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ নিশ্চিত হতে হবে।
(২)    ব্যবহারের পূর্ব পর্যন্ত ভ্যাকসিন কুল বক্স বা ফ্লাক্সে রাখতে হবে। 
(৩)    ব্যবহারের পূর্বে বোতল ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে যাতে টিকা সমভাবে মিশে যায়।
(৪)    ভ্যাকসিন সাধারণত ভোরে দেয়া উত্তম।
(৫)    সরাসরি সূর্য কিরণ থেকে টিকার বোতল দূরে রাখতে হবে।
(৬)    সব গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া একত্র করে ভ্যাকসিন দিতে হবে।
(৭)    বোতল খোলার ২ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদান শেষ করা উত্তম।
(৮)    ভ্যাকসিন কোনো ছায়াযুক্ত বা গাছের নীচে ব্যবহার করতে হবে।
(৯)    যে কোনো ভ্যাকসিন প্রথমে একটি  পশুকে দিয়ে ১৫-২০ মিনিট লক্ষ্য করতে হবে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয় কিনা যদি না হয় তবে নিশ্চিন্তে বাকী পশুদেরকে দেয়া যায়।
(১০)    যে সব টিকা চামড়ার নীচে দিতে হয় তা যেন কোনো অবস্থায় মাংসপেশীতে না যায়। 
(১১)    টিকা কেবল সুস্থ সবল পশুকে দেওয়া উচিত।
(১২)    দুর্বল পশু ও ৪ মাসের নীচের পশুকে  ভ্যাকসিন দেয়া ঠিক নয়।    

ভ্যাকসিন বা টিকা ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণসমূহ 
যেসব কারণে গবাদিপশুকে ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়ার পরও রোগ প্রতিরোধ হয় না তা নীচে বর্ণিত হলো। 
১.    পশুপাখির যে রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে যদি ওই রোগের জীবাণু পূর্বেই পশুপাখির শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে তবে ওই ভ্যাকসিন কার্যকর হবে না বরং আরো দ্রুত রোগ দেখা দিবে।। এজন্য কোনো পশুপাখির খামার/ ঝাঁকে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার পর ওই খামার/ঝাঁকে কোনো সময়ই ওই রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন দেয়া উচিত নয় । 
২.    ভ্যাকসিনের গুণগতমান সঠিক না থাকলে অর্থাৎ নিম্নমানের হলে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেও কাজ হয় না। সাধারণত রোগজীবাণুর স্ট্রেইন, টাইপ এবং ভ্যাকসিনের স্ট্রেইন, টাইপ এক হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরও পশুপাখি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। 
৩.    ভ্যাকসিন ঠিকমতো বা পরিমাণমতো শরীরে প্রবেশ না করলে ভ্যাকসিন ফলপ্রসূ হয় না ।  
৪.    সুষ্ঠু পরিবেশ তথা যথাযথ তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ না করলে ওই ভ্যাকসিন দেয়ার পরও রোগ দেখা দিতে পারে। 
৫.    জীবিত জীবাণু দিয়ে তৈরি ভ্যাকসিনের জীবাণুগুলো মৃত হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। 
৬.    ভ্যাকসিন দেয়ার যন্ত্রপাতি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত না হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। 
৭.    খাবার পানির মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেয়ার সময় ক্লোরিনযুক্ত পানি ব্যবহার করা হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। 
৮.    ভ্যাকসিন পানির সাথে মিশানোর পর সাথে সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং তা সংরক্ষণ করা যাবে না। 
৯.    ভ্যাকসিন ব্যবহারের সময় ভ্যাকসিন ফ্রিজ থেকে বের করার পর ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় আনার পর প্রয়োগ করতে হয়। প্রয়োগের পূর্বে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হয়। বোতল খোলার পর গ্রীষ্মকালে ৪ ঘন্টা ও শীতকালে     ৮ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হয়। অন্যথায় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে। 
১০.    যে ভ্যাকসিনের ব্যবহারের তারিখ শেষ হয়ে গেছে ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। 
১১.    অসুস্থ ও দুর্বল পশুকে ভ্যাকসিন দিলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় না। 

Post a Comment

Previous Post Next Post